বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-এর ধানের জাত উন্নয়ন কর্মসূচীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলো কৌলিসম্পদ ও বীজ (Genetic Resources and Seed-GRS) বিভাগ। ব্রি-তে ১৯৭৪ সালে জিনব্যাংক (genebank) প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশী-বিদেশী নানা উৎস থেকে সংগৃহিত ও প্রাপ্ত ধানের বীজ (germplasm) পদ্ধতিগতভাবে সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছিল উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের তত্ত্বাবধানে। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে কৌলিসম্পদ ও বীজ বিভাগ নামে একটি স্বতন্ত্র বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। বীজ সংরক্ষণের জন্য ভৌত ও কারিগরি সুবিধাদির ব্যাপক সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন ঘটিয়ে ২০০৭ সাল নাগাদ একটি পূর্ণাঙ্গ, আধুনিক দীর্ঘ-মেয়াদী ধান জিনব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে: স্হানীয় ও বিদেশী ধানের জাত এবং জার্মপ্লাজম অনুসন্ধান, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, অঙ্গসংস্থানগত (morphological) ও মলিকুলার (molecular) বৈশিষ্ট্য নিরূপন ও মূল্যায়ণ, বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জন্য জিন বা QTL সনাক্তকরণ, ধানের germplasm ও বীজ প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণা। এই বিভাগের উল্লেখযোগ্য অর্জনগূলো হলো: একটি সুগন্ধী ধানের জাতসহ ১৫টি ধানের জাত উদ্ভাবনে জার্মপ্লাজম ও কারিগরি সহায়তা, ৮,৬০৪টি ধানের জার্মপ্লাজম জিন ব্যাংকে নিবন্ধন করা যার মধ্যে ১৬১০টি বিদেশী ইন্ডিকা ও ১১১ জাপোনকিা ধানের জাত আছে, এক হাজারেরও বেশী জাতের বিভিন্ন জৈব ও অজৈব ঘাত সহিষ্ণুতা মূল্যায়ন, প্রায় ১২০০ ধানের জার্মপ্লাজম SSR marker দ্বারা মলিকুলার পর্যায়ে বৈশিষ্ট্যায়ন, নিউক্লিয়াস বীজসহ ১১১টি ব্রি উদ্ভাবিত এবং প্রস্তাবিত ধানের জাত রক্ষণাবেক্ষণ, প্রতি বছর প্রায় ১০০ টনের অধিক ব্রি উদ্ভাবিত জাতসমূহের ব্রিডার বীজ বিএডিসিসহ প্রায় 1000 সীডনেট পার্টনারকে সরবরাহ করা যার ফলে জাতীয়ভাবে ‘প্রাতিষ্ঠানিক খাত’ হতে বীজের সরবরাহ ৫% থেকে প্রায় ৪০% এ উত্তীর্ণ হয়েছে। আর এভাবেই এই বিভাগ সরাসরি ক্ষুধা মুক্তি এবং খাদ্য নিরাপত্তায় ভুমিকা রেখে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) অর্জনে সহায়তা করছে।
প্রকাশনা |
কৌলিসম্পদ ও বীজ বিভাগের রুপান্তর |